১০০০ বছর আগে কেমন ছিল পৃথিবী । ১০০০ বছর আগে কেমন ছিল ভারত বাংলা
১০০০ বছর আগে কেমন ছিল পৃথিবী । ১০০০ বছর আগে কেমন ছিল ভারত বাংলা
বর্তমান সময়ে সবকিছু অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমরা এখন চাইলেই কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারি। চাইলেই কয়েক মুহুর্তের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে থাকা মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারি। এখনকার সময়ে টেকনোলজি অনেক আপডেট হওয়ার সাথে সাথে মানুষগুলোও স্মার্ট হয়ে গেছে । এই প্রজন্মের মানুষগুলোর লাইফ স্টাইল এমন হয়ে গেছে যে প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া তারা এক পাও সামনে অগ্রসর হতে পারে না ।
কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন। আজ থেকে এক হাজার বছর আগে আমাদের পৃথিবী তথা এই ভারত বাবাংলা কেমন ছিল। আর তারা কেমন ভাবে জীবনযাপন করতো। কেমন ছিল তাদের নিত্যদিনের লাইফস্টাইল।
এটা বলাই বাহুল্য যে আমাদের এখনকার বর্তমান পৃথিবীর সাথে 1000 খ্রিস্টাব্দের আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। সে সময় পৃথিবী অনেক বড় ছিল। কারণ তখন পায়ে চলা পথ মানে শুধুমাত্র পায়ে চলা পথ ,ঘোড়া বা পালতোলা নৌকা ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। তাই এই জন্য মানুষ তাদের আশেপাশের অল্পকিছু দূরত্বের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে। এ ছাড়া সেসময় দূরের পথ পাড়ি দেওয়া নিয়ে মানুষের মনে নানারকম কুসংস্কার ছিল। তাই মানুষ তাদের বাসস্থান থেকে খুব একটা দূরত্বের পথে যাতায়াত করত না। তখনকার দিনে সব জায়গার মানুষের কথা বলার ধরন আলাদা আলাদা ছিল। কারন মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় খুব একটা যেতে পারত না। তাই তারা কেউ একে অপরের ভাষা জানতো না।
1000 সালে আজকের মত বড় বড় শিল্প কারখানা ছিলনা। কারণ সে সময়ে ফ্যাক্টরি বা মেশিন আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু সেই সময় চিনে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন হতো। সেই সময় একটি ভাটিতে একবারে হাজার-হাজার বাসনপত্র আর খেলনা তারা বানিয়ে ফেলত। এগুলো বানানোর জন্য তারা চীনা মাটি ব্যবহার করত ।এই ভাটিতে কাট আর কয়লার সাহায্যে তারা আগুন জালাতো । তখনকার দিনে ভারতে পোশাক-আশাক খাবার জিনিসপত্র মসলা ইত্যাদি খুব ভালো পরিমাণে উৎপাদন হতো। আর ভারত থেকে এই সব জিনিসপত্র পুরো পৃথিবীতে বিক্রি করা হতো । এই সময় ভারত পুরো পৃথিবীর মধ্যে ৩০ শতাংশ খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করত। আর চায়না সে সময়ে 25% উৎপাদন কররত। এবং ইউরোপ মাত্র 11 শতাংশ উৎপাদন করত। তখন সবথেকে বেশি জনসংখ্যা এই তিনটি জায়গাতেই ছিল। এছাড়া আমেরিকা ল্যাটিন আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া রাশিয়া এইসব দেশগুলোতে জনসংখ্যা খুবই কম ছিল। এই দেশগুলো সেই সময়ের তুলনায় অনেকটাই অনুন্নত ছিল।
সেই সময়ে শহরে কেবল দোকান আর সবজি বসত। আর দোকানভুলো পাশাপাশি থাকতো। যা এখনো কিছু কিছু জায়গায় দেখা যায় । তখনকার দিনে মোবাইল সিমকার্ড গেজেট আর টেকনোলজির কোন দোকান ছিল না। কিন্তু সে সময় সোনারূপা বাসন জামাকাপড় খাবার মসলা সুগন্ধি পারফিউম ফলমূল এবং ধর্মীয় জিনিসপত্রের দোকান ছিল। তখন কারিগররা যারা কাজ করতো তারা নিজেদের হাতেই সমস্ত কাজ করতো। যেমন ছুতোর কর্মকার কুমর তারা সবাই নিজ নিজ কাজে পারদর্শী ছিল। এখন যেসব ছোট ছোট নিখুঁত কাজ বড় বড় মেশিনের দ্বারা করা হয়।।সেইসব কাজ তখনকার দিনে কারিগররা নিজেদের হাতেই করত। সেই সময় ভারতে 10 শতাংশেরও কম জনসংখ্যা। শহরে বসবাস করত। আর 90 শতাংশেরও বেশি জনসংখ্যা গ্রামে বসবাস করত। প্রত্যেকটি গ্রামে পানির জন্য পুকুরের ব্যবস্থা থাকত। আর যে গ্রামে পুকুর থাকত না সেখানে মাটি খুঁড়ে পুকুর কাটা হত। আর প্রত্যেকটি গ্রামে কম করে একটি মন্দির বা মসজিদ থাকতোই। তখনকার দিনে গ্রামের কৃষকরা বেশিরভাগ সময় তাদের চাষাবাদের জন্য বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করে থাকতো ।
1000 সালে সব বাড়ি ঘর বা মহল মাটিকাঠ বা হাতে বানানো ইট দিয়ে তৈরি করা হত। আজকের দিনের সিমেন্টের তৈরি বাড়ির আয়ু ৬০ থেকে ৭০ বছরের হয়ে থাকে। কিন্তু তাও এইসব ঘরে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ফাটল ধরতে শুরু করে। কিন্তু পুরানো দিনে। সব বড় বড় প্রাসাদ বাড়িঘর শুধু চুনামাটি এবং সাধারন মাটি দিয়ে বানানো হতো। এই ঘরগুলোর আয়ু ছিল 500 থেকে হাজার বছর। এমনকি আজকের দিনেও আপনি ৫০০ বা হাজার বছর আগের পুরানো বড় বড় প্রাসাদ এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবে।
1000 বছর আগে মুদ্রার ব্যবহার ছিল। যা এখন টাকা এবং পয়সায় পরিণত হয়েছে। একেই তখনকার দিনে মুদ্রা বলা হত। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ লেনদেন প্রথার মাধ্যমে অধিকাংশ জিনিসের কেনাবেচা করত। মানে একটি জিনিসের বদলে অন্য কিছু জিনিস নিত। যেমন গমের বদল এর চাল। ঘরের বদলে ফল কিংবা বাসনের বদলে কাঠ। এইভাবে বেশিরভাগ জিনিসের কেনাবেচা হত। ফখনকর সময়ে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের পারিবারিক ব্যবসা করত। কিন্তু এখনকার দিনে তার উলটো । কেউ যদি পড়াশোনা করে চাকরি বাকরি না পায়। তবে গিয়ে কেউ পারিবারিক ব্যবসা করে। এখন যার বাবা যে কাজ করে তার ছেলে সেই কাজটি করে না। কিন্তু আজ থেকে এক হাজার বছর আগে যার বাবা যেই কাজ করত তার ছেলেও সেই কাজটি করত।
তখনকার দিনে রাজ্যের বড় বড় সিদ্ধান্ত রাজারাই নিত। কিন্তু গ্রাম আর ছোট ছোট শহরে ছোট ছোট সমস্যাও থাকতো। এই ছোট ছোট সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানে কোর্ট আছে। কিন্তু সেই সময়ে ন্যায় বিচারের জন্য আলাদা কিছু ছিল না। তাই তখনকার দিনে এই ছোট ছোট সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামের বয়স্ক মানুষেরা পঞ্চায়েত বসাত। সেখানে সবাই তাদের ছোট ছোট সমস্যা নিয়ে যেত। আর এই বয়স্ক মানুষেরা তাদের ন্যায় বিচার করতো।
সে সময়ে বেশিরভাগ বিয়েই পারিবারিকভাবে হত। আর এই বিয়ের পাত্র পাত্রীরা বেশির ভাগই আলাদা আলাদা গ্রামের হত। একই গ্রামের মেয়ের সাথে সেই গ্রামের কোন ছেলের বিয়ে হত না। আর একই গোত্রের মেয়ের সাথে কেউ তাঁদের ছেলের বিয়ে দিত না। তখন বরযাত্রী একদিনের জন্য চেতনা বরং 4 5 দিনের জন্য যেত। তখনকার দিনে গাড়িঘোড়ার সুবিধা ছিল না। তাই গরুর গাড়িতে বরযাত্রী যেত।
তখনকার দিনে পড়াশোনা শেখার জন্য পাঠশালা চলত। তখন ভারতীয়দের সাথে পড়াশোনা শেখার জন্য কিছু বিদেশী ছাত্ররাও আসতো। তারা বিভিন্ন কলা শেখার জন্য এখানে আসতো। যেমন অ্যাস্ট্রোনমি সার্জারি চিকিৎসা এগ্রিকালচার। ম্যাথমেটিক্স একাউন্টিং ল মিলিতারী স্ট্রাটেজি ইত্যাদি।
¡
তো বন্ধুরা এই ছিল 1 হাজার বছর আগের ভারত বর্ষ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। আপনার কি মনে হয় এখনকার সময় ভালো নাকি এক হাজার বছর আগের সময়গুলো ভালো ছিল। আপনার মতামত অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বিভিন্শেন সোশ্য়াযাল সাইটে র করতে পারেন। ধন্যবাদ।
অনেক কিছু জানতে পারলাম, হাজার বছর আগে ছিল বিশুদ্ধ যুগ, তার স্বাদ সম্পূর্ণ আলাদা, সেটা কিছুটা হলে ও অনুভব করি।
কিন্তু বর্তমান হল অতি উন্নত যুগ,কিন্তু মানুষের মনুষ্যত্ব ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।
আরও লিখুন ধন্যবাদ।
আগের দিনটাই মনে হয় ভালো ছিল