ইউটিউব চ্যানেল নিরাপদ রাখার উপায় | জিমেইল একাউন্ট নিরাপদ রাখার উপায়

YouTube Channel Security-

আপনার হয়তো একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে । যা আপনি নিরাপদ রাখতে চাচ্ছেন । হ্যাকাররা যেন এই চ্যানেলটি নিয়ে নিতে না পারে তাই আপনি হয়তো চিন্তিত আছেন । আজকে আমি আপনাদের ইউটিউব চ্যানেল নিরাপদ রাখার এমন কিছু উপায় বলে দেবো । যা আপনি যদি ফলো করেন তাহলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের নিরাপত্তা নিয়ে আপনাকে কখনোই ভাবতে হবে না । তাই ধৈর্য্য সহকারে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন।

ইউটিউব চ্যানেল নিরাপদ রাখার উপায় 

ধাপ ১ঃ প্রথমে আপনার যে জিমেইল টি দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলা সেই জিমেইল দিতে লগইন করুন । এরপর Personal Info তে গিয়ে আপনার সঠিক জন্ম তারিখ দিন । পাশাপাশি জিমেইলের জন্য 10 থেকে 12 সংখ্যার অনেক কঠিন একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন । পাসওয়ার্ড ছোট হাতের অক্ষর বড় হাতের অক্ষর বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা ও সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করবেন । যেমনঃ KDYnhf174#&℅$ । আশা করি বুঝতে পেরেছেন । আর একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন আপনার পাসওয়ার্ড কখনোই অন্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না । আর আপনি যেই পাসওয়ার্ড দেন না কেন সেটা অবশ্য মনে রাখার চেষ্টা করবেন অথবা কোথাও লিখে রাখবেন । পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে পরবর্তীতে আপনার লগইন করতে কিন্তু সমস্যা হতে পারে।


ধাপ ২ঃ এরপর Contact Info তে গিয়ে আপনার পার্সোনাল জিমেইল ও ফোন নাম্বার এড করুন  এবং এই জিমেইল এবং ফোন নাম্বার ভেরিফাই করুন । এখানে কখনোই আপনার জিমেইল বা ফোন নাম্বার ছাড়া অন্য কারো টা দিবেন না । আপনি যদি কখনো আপনার পাসওয়ার্ড ভুলে যান তাহলে এই ফোন নাম্বার ও জিমেইল আইডির আপনার আইডিটি রিকভার করতে পারবেন।

ধাপ ৩ঃ আপনার যদি কখনো সন্দেহ হয় কিংবা আপনি যদি জানতে চান আপনার একাউন্টে কেউ লগইন করেছে কিনা এটা জানার জন্য Data & Personalization অপশনে যান এরপর Activity Controls অপশনে গিয়ে সেখানে দেওয়া তথ্যগুলো ফলো করুন তাহলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার ডিভাইস ছাড়া অন্য কেউ লগইন করেছেন কিনা । কোন ডিভাইস আপনার সন্দেহ হলে সেখান থেকে সেই ডিভাইসটি রিমুভ করে দিন সাথে সাথেই।

এরপর Web & App Activity অপশনে গিয়ে দেখতে পারবেন  কোন অ্যাপসে কিংবা কোন ওয়েবসাইটে আপনি আপনার একাউন্ট দ্বারা লগইন করেছিলেন । সন্দেহ হলে সাথে সাথেই সেই অ্যাপস বা ওয়েবসাইট থেকে রিমুভ করে দিন।

Location History এই অপশনে গিয়ে আপনি জানতে পারবেন যে কোন কোন লোকেশন থেকে আপনার আইডিটি লগইন করা হয়েছে । এখানে লোকেশন আপনার সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিন । অর্থাৎ সাথে সাথেই আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন।

আপনি আপনার YouTube History বা YouTube search history খেয়াল করুন । আপনি যে যে বিষয় গুলো সার্চ করেছেন ইউটিউবে সেই লেখাগুলো এখানে দেখতে পাবেন । এখানে যদি এমন কোনো লেখা দেখেন আপনি সার্চ করেন নি তাহলে বুঝবেন অন্য কেউ আপনার একাউন্ট থেকে সার্চ করেছে । আর এমনটা মনে হলে সাথে সাথে আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন।

এ পর্যায়ে আপনার একাউন্ট নিরাপদ রাখার জন্য আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় বলে দিব যা আপনি অবশ্যই ফলো করবেন বলে আশা করছি।

ধাপ ৪ঃ এই স্টেপে আপনি চলে যান Security অপশনে । এই অপশনে আসার পর আপনি দেখতে পাবেন আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড কবে কখন কোথায় বসে চেঞ্জ করা হয়েছে । এখানে আপনার সন্দেহ হলে দ্রুত আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন ।

আপনার অ্যাকাউন্ট আরো নিরাপদ রাখার জন্য  2-Step Verification অপশনটি অবশ্যই চালু করে রাখুন। এই অপশনটি চালু থাকলে আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড যদি কেউ জেনে যায় কিংবা আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবে না । আপনি এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এবং অপশনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটা অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার জন্য । 2-Step Verification অপশনটি চালু করার সময় অবশ্যই আপনার নিজের নাম্বার টি ব্যবহার করবেন । কারণ এই অপশনটি চালু করার পর যতবার আপনি লগইন করতে যাবেন কিংবা অন্য কেউ লগইন করতে যাবে ততবারই এই নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে । আর এই কোডটি বসানোর পরেই আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন । অন্যথায় আপনার অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে পারবেন না।

এই অপশনটি চালু করার মাধ্যমে আপনি এত টান এতোটুকু নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার একাউন্টে অন্তত 99% নিরাপদ রয়েছে।

ধাপ ৫ঃ আপনার অ্যাকাউন্টটি আরো নিরাপদ রাখার জন্য Backup Codes অপশনে গিয়ে আর্ট সংখ্যার 10 টি কোড স্ক্রিনসর্ট প্রিন্ট কিংবা অন্য কোথায় সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন । আপনার একাউন্ট যদি কখনো হ্যাক হয়ে যায় কিংবা  আপনি যদি কখনো পাসওয়ার্ড ভুলে যান তাহলে এই কোডগুলো ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন । পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে আপনি যদি কোন ইনফরমেশন দিতে না পারেন তাহলে এই কোডগুলো ব্যবহার করতে পারেন এটা গুগলের লাস্ট সুযোগ বলা যেতে পারে।

ধাপ ৬ঃ আপনার ইউটিউব চ্যানেল কিংবা জিমেইল আইডিটি আরো নিরাপদ রাখার জন্য Google authentication app ব্যবহার করতে পারেন । এটা অনেকটা 2-Step Verification এর মত কাজ করে। আপনি যদি আপনার একাউন্টের সাথে এই অ্যাপসটি কানেক্ট করে রাখেন । তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করার সময় এই অ্যাপস থেকে কোড নিয়ে খুব সহজে লগইন করতে পারবেন।

আপনার জিমেইল এবং ইউটিউব চ্যানেল নিরাপদ রাখার জন্য উপরের যে ধাপগুলো বলা হলো সেগুলো সম্পূর্ণরূপে পালন করার চেষ্টা করুন তাহলে আপনার একাউন্টে নাইনটি নাইন পারসেন্ট নিরাপদ নিরাপদ থাকবে বলে আশা করছি।

এই কাজগুলো করতে গিয়ে আপনার কোন সমস্যা হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন । তাছাড়া ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও রয়েছে সেগুলো দেখে আপনি এই কাজগুলো খুব সহজে করে নিতে পারবেন । ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url