এস এস এফ (SSF) কি ? SSF - Special Security Force

প্রত্যেকটি দেশের ডিফেন্স ফোর্সে  যারা চাকরি করেন তারা নিজেদেরকে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিয়ে দায়িত্ব পালন করে থাকেন । আপনি একটু খেয়াল করলে দেখবেন সব দেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ও ভিআইপি ব্যক্তিদের আশেপাশে সব সময়  অস্ত্রধারী এবং বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এবং সানগ্লাস পড়া বিশেষ কিছু স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স থাকে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন এরা কারা। কি কি কোয়ালিটি বা যোগ্যতা থাকলে তাদেরকে এই ধরনের প্রফেশনে  নিযুক্ত করা হয়। বাস্তবে তারা কতটুকু সিকিউরিটি দিতে পারে, কতটুকু একটিভ এবং ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে বিশেষ ধরনের স্পেশাল।

আজকে আমরা বাংলাদেশের অত্যাধুনিক ক্ষমতাসম্পন্ন ডিফেন্স ফোর্স এস এস এফ সম্পর্কে জানব ।

এস এস এফ (SSF) কিঃ

এসএসএফ হল বাংলাদেশের একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা । এস এস এফ এর পূর্ণ অর্থ হলো স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স । এদের মূল কাজ হলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতার পরিবারবর্গ দের সুরক্ষা নিশ্চিত করা । পাশাপাশি এরা দেশি এবং দেশে আসা বিদেশ থেকে ভিআইপি ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে । এরা অনেক সময় ভিআইপি ব্যক্তিদের বাসাবাড়ি অফিসের নিরাপত্তা প্রদানে কাজ করে থাকে ।


এসএসএফ বা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর চৌখস এবং উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী । এসএসএস ছাড়াও বাংলাদেশে আরও অনেক ডিফেন্স ফোর্স রয়েছে। তারাও যথেষ্ট একটিভ এবং ক্ষমতা সম্পন্ন। বাংলাদেশ আর্মি নৌ বাহিনী  বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাছাই করে এই এসএসএফ এ নিয়োগ দেওয়া হয় ।

এসব ডিফেন্স ফোর্স এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের থেকেও এস এস এফ এ নিয়োগ দেওয়া হয় । তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে তাদেরকে এই এই স্পেশাল ফোর্সে  আসতে হলে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে স্পেশাল ট্রেনিং ও কোর্স সম্পন্ন করতে হয় । আর এসবের মধ্যে যাদের পারফরম্যান্স সবচেয়ে বেশি ভালো থাকে ও যারা অলরাউন্ডার থাকেন তাদের মধ্য থেকে গুটিকয়েক' লোক বেছে নেওয়া হয় এই স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এর জন্য।

স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স বা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। একটি বাংলাদেশি আইন প্রয়োগকারী বিশেষ সংস্থ। যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে । এছাড়াও তারা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাড়ি ও অফিসের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স অর্ডিন্যান্স নামে এটি অধ্যাদেশ জারি করেন। পরবর্তী তে ১৯৯১ সালে ২৭ শে সেপ্টেম্বরে এর নাম পরিবর্তন করে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নামকরণ করা হয়।

এই সংস্থাটির রয়েছে যেকোন কাউকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করার এখতিয়ার রয়েছে ।এই বাহিনীতে কর্মরত সকল সদস্য নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব কে শুধুমাত্র পেশা হিসেবে দেখেন না বরং তারা মহৎ কর্তব্য ও ব্রত হিসেবে ধারণ করে থাকেন।

এই বাহিনীর সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বা রাস্ট্রপতির আশেপাশে কখনো পোশাকে কখনো ভিন্ন পোশাকে আবার কখনো ছদ্মবেশে অবস্থান করে। এরা  প্রধানমন্ত্রীসহ ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদের জীবন দিতেও পিছ পা হয়না।।প্রত্যেকটি এসএসএফ সদস্যের গায়ে বুলেট পুরুপ  জ্যাকেট পড়ানো থাকে। এদের পোশাক বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনীর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এছাড়াও এদের শরীরের বিভিন্ন অংশে থাকে অত্যাধুনিক সব ফাইটিং অস্ত্র।

চোখে বিশেষ নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেকটি সদস্যদের চোখে  কালো কালারের বুলেট পুরুপ সানগ্লাস পরা থাকে। এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। আর এরা প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষার জন্য যেকোন যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। পৃথিবীর সব অত্যাধুনিক অস্ত্র এই এস এস এফ এর  ফোর্স এর কাছে রয়েছে । দূর থেকে গুলি করার জন্য এদের কাছে রয়েছে বিশেষ ধরনের স্নাইপিং গান। আর এই অস্ত্র দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে থেকেও নিখুঁত ভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা সম্ভব। এছাড়াও এদের কাছে রয়েছে অটোমেটিক রাইফেল এবং মেশিনগান। এসএসএফ বাহিনীর সদস্যরা সব ধরনের অস্ত্র চালাতে সক্ষম। যা অন্য যব বাহিনী বয়তপারেনা।

এসএসএফ বাহিনীর  সাধারণত যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন তা হলো টাইপ 57 mp5 9mmsmg spas12 g lock 23 এছাড়াও আরও অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র। এস এস এফ এর প্রতিটি সদস্যকে অস্ত্র চালানো শিখতে হয় অত্যাধুনিক কৌশল। তাদের এক মিনিটে আটটি গুলি করার অনুমোদন রয়েছ। যা অন্য কোন ফোর্সের নেই। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এর হেড অফিস রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত। বাংলাদেশের এসএসএফ বাহিনীকৌশলগতভাবে অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও অত্যাধুনিক। এছাড়াও যেকোনো আক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত কৌশলগত এই সহায়তার দলকে নিয়োজিত  করা হয়েছে।



শুধুমাত্র ভূমি থেকে নয় এরা উপর থেকেও নির্ভুলভাবে নিশানা ভেদ করতে  পারে । এসএসএফ  সদস্যদের বোমা এবং অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্যের উপরে বিশেষ ধরনের ট্রেনিং নেয়া থাকে। এরা যেকোনো ধরনের বোমা মুহূর্তেই শনাক্ত এবং নিষ্ক্রিয় করতে পারে । এরা ভিয়াইপিদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে।

2011 সালে এস এস এফ এর প্রশিক্ষণ শাখায় 16 জন প্যালেস্টাইনি নিরাপত্তা নিরাপত্তাকর্মীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা বয় । এছাড়াও ভুটান মালদ্বীপ ও অন্যান্য দেশ এই প্রশিক্ষণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে গোপনীয়তার স্বার্থে অনেক রকম তথ্য ও ট্রেনিং এর কথা এসএসএফ পাবলিকলি প্রকাশ করেন না।

আমরা আশা করব এই স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স তাদের লক্ষ্য হিসেবে সব ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকির মোকাবেলা করে গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানতম ব্যক্তিত্ব ও জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাবে। যা বিগত 30 বছর ধরে এস এস এস বা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স  সততা ও নিষ্ঠার সাথে করে আসছে। সেসব এই মহান পেশায় কর্মরত সকল সদস্যদের প্রতি রইল আমাদের চ্যানেল এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ সালাম ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url