রমজান মাসে সাহরি, ইফতার ও রাতে কী খাবেন

রমজান মাসে সাহরি, ইফতার ও রাতে কী খাবেন

রমজান মাস বছরের অন্যান্য মাস থেকে আলাদা। এবারও পুরো রমজান মাস জুড়েই থাকছে প্রচন্ড গরম। তাই আমাদের প্রায় 14-15 ঘন্টা সমস্ত প্রকার পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা পালন করতে হবে । আর এই রোজায় সুস্থ থাকতে হলে খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে। শরীরকে সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি—এই ছয়টি উপাদান আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। পবিত্র রমজানে ইফতার, রাতের খাবার ও সাহরিতে কী খাবেন জেনে নিন।

ইফতারের খাবার

ইফতারে সহজপাচ্য এবং কম তেল-মসলাযুক্ত খাবার খান। কারণ, প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা দীর্ঘসময় না খাওয়ার ফলে গুরুপাক ও ভারী খাবার খেলে হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শারীরিক জটিলতা হতে পারে। তাই খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতে পারেন। তারপর অল্প অল্প করে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। একবারে না খেয়ে বারবার পানি পান করুন। নারকেল পানি, লেবু পানি, মৌসুমি ফলের রস খেতে পারেন। আপনি এই পানীয়গুলিতে টোকমাদানা, চিয়া বীজ, ইসবগুলের ভুসি, শণের বীজ ইত্যাদি যোগ করতে পারেন। 

গ্রিল এড়িয়ে চলুন। ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। তবে এই গরমে ভাজা ছোলার পরিবর্তে শসা, টমেটো, লেবু এবং দুই-তিনটি কাঁচা রসুনের সঙ্গে অঙ্কুরিত ছোলা ভালোভাবে মেখে খেতে পারেন। মুরগির মাংসের সঙ্গে দুই-তিন ধরনের ডাল মিশিয়ে কম মসলা দিয়ে হালিম বানাতে পারেন। টক দইয়ের সাথে লাল চিড়া, ওটস, বার্লি খেতে পারেন। এ ছাড়া টক দই, লাল চিড়া, যেকোনো মৌসুমি ফল একসঙ্গে ব্লেন্ড করলে উপকার পাবেন। 

বিভিন্ন মৌসুমি সবজির সঙ্গে মুরগির মাংস মিশিয়েও চিকেন স্যুপ তৈরি করা যায়। একদিনের ইফতারে দুধ, ফল, সাগুদানা ও সুজি দিয়ে ফালুদা বানাতে পারেন। দুধ ও ডিম দিয়েও পুডিং বানাতে পারেন। কেউ চাইলে ইফতারে রুটি বা ভাত, ডাল, সবজি, মাছ-মাংস বা ডিম ইত্যাদি রাখতে পারেন।

রমজান মাসে সন্ধ্যা রাতের খাবার

অনেকে সন্ধ্যায় না খেয়ে সরাসরি সাহরি খান। এই অভ্যাস একেবারেই ঠিক নয়। অন্য সমযয়ের সকালের নাস্তার সমপরিমাণ খাবার কমপক্ষে সন্ধ্যায় খেতে হবে। সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। রাতের খাবারে লাল আটার রুটি বা সামান্য ভাত, ডাল, সবজি, মাছ বা মাংস বা ডিম অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। 

আপনি প্রতি রাতে একই খাবার পছন্দ নাও করতে পারেন, তাই কিছু দিন আপনি খাবারে ভিন্নতা আনতে  সবজি এবং মুরগির সাথে স্যুপ খেতে পারেন। দুধের সাথে সামান্য ওটস, লাল চিড়া, বার্লি এবং খেজুর মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করে রাতের খাবার টেবিল সাজাতে পারেন। যে খাবারই খান না কেন, খাবারের শেষের দিকে সামান্য টক দই দিয়ে খাওয়া ভালো। এই অভ্যাস ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনর্জন্ম সাহায্য করবে.

রমজান মাসে সেহেরির খাবার

সাহরির খাবার হবে অন্য সময়ের দুপুরের খাবারের সমান পরিমাণ। যেসব খাবার পেটে অনেকক্ষণ থাকে এবং ধীরে ধীরে হজম হয় সেসব খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অনেকে মনে করেন যেহেতু সারাদিন খেতে হয় না, তাই সাহরির সময় অতিরিক্ত খাবার খেতে হয়। একেবারে না. কারণ, চার-পাঁচ ঘণ্টা পর খাবার পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়। তাই প্রয়োজনের বেশি না খাওয়াই ভালো। আপনি যত বেশি খেলবেন, ক্ষতির ঝুঁকি তত বেশি।

সাহরিতে লাল আটার রুটি বা লাল ভাত খেতে পারেন। আপনি যেটা খেতে ভালোবাসেন সেটা খেতে পারেন। সঙ্গে এক বাটি ডাল, এক কাপ সবজি, মাছ-মাংস বা যেকোনো একটি আইটেম (দুই আইটেমও খেতে পারেন)। আপনি যদি খাবারের আসল পরিমাণটি আরও সঠিকভাবে বুঝতে চান তবে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্লেট নিন এবং এটিকে চারটি ভাগে ভাগ করুন। এবার এতে থাকবে দুই ভাগ মিশ্র সবজি, এক ভাগ ভাত বা রুটি এবং এক ভাগ প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি। সাহরির সময় এক গ্লাস হালকা গরম দুধ রাখতে হবে। যে কেউ চাইলে দুধের সঙ্গে লাল চিড়া বা ওটস খেতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url