শিশুর দুধ দাঁতের পরিচর্যা ও যত্ন

দাঁত মানুষের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য অঙ্গ। একজন মানুষের পুরো জীবনে দুবার ২ বার দাঁত ওঠে। প্রথম কোন শিশুর যে দাঁত ওঠে সেটিকে দুধ দাঁত বলা হয় । আর এই দাঁতের আরেক নাম ডেসিডুয়াস দাঁত। দুধের দাঁত পড়ে যাওয়ার পর যে ২য় বার যে দাঁত উঠে তা স্থায়ী হয়।

মূলত ছয় মাস বয়স থেকেই শিশুদের দাঁত গজায়। এই দুধে দাঁতগুলি সাধারণত ছয় বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আর এই দুধ দাত সর্বোচ্চ বিশটি দাঁত থাকে। তারপর ধীরে ধীরে দুধের দাঁত পড়ে যায় এবং স্থায়ী দাঁত উঠে।

ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ ডাঃ আনসার আহমেদ বলেন, শিশুদের দাঁত নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে প্রায়ই ভুল ধারণা থাকে। তারা মনে করেন, দুধ দাঁত পড়ে গেলে এমনি এমনি স্থায়ী দাঁত গজাবে। তাই দুধ দাঁত পড়ে গেলে তারা সাধারণত কোনো চিকিৎসা করান না। 

কিন্তু অনেক সময় এই দাঁতগুলো পড়ে গিয়ে মাড়িতে গর্ত হয়ে যায়। সেজন্য ফিলিং বা চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ অভিভাবক তা করেন না। আবার অনেকেরই দুধ দাঁত সময়ের অনেক আগেই ফেলে দেয়। এটা উচিত নয়.
 
আরেক বিশেষজ্ঞ ড. কামরুল হাসান বলেন, অনেক শিশুর ঘুমের মধ্যে খাওয়ার অভ্যাস থাকে। আবার অনেক শিশু খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়ে। এতে দাঁতের বিভিন্ন রোগ হতে পারে। ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং স্ট্রেপ্টোব্যাকটাস মিউটানস নামক ব্যাকটেরিয়া প্রাথমিকভাবে দাঁতের ক্যাভিটি সৃষ্টির  জন্য দায়ী। 

যদি দুধ, মিষ্টি বা এই জাতীয় কোনো খাবার দাঁতে দীর্ঘক্ষণ লেগে থাকে তাহলে তা ব্যাকটেরিয়া নিঃসরণের উপযুক্ত মাধ্যম তৈরি করে যা ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে যা দাঁতের উপরের অংশের এনামেলকে ক্ষয় করে এবং দাঁতে গর্তের সৃষ্টি করে। 

প্রায়শই শিশুদের নার্সিং বোটল সিনড্রোম বা আর্লি শৈশব ক্যারিস রোগ থাকে। এতে সামনের দাঁতে ক্যাভিটি হয়। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। তাহলে আপনাকে অবশ্যই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দাঁতের সুরক্ষার জন্য অভিভাবকদের অবশ্যই শিশুদের প্রতি একটা নির্দিষ্ট  সময় পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে যাতে কোনো সমস্যা না হয়। আর সমস্যা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url