আমের পুষ্টিগুন, উপকারিতা ও অপকারিতা
আমের প্রজাতি বা আম কত ধরনের হয়
আমের বিভিন্ন প্রকার বা প্রজাতি রয়েছে। ধরনের উপর নির্ভর করে, স্বাদ, রং এবং গন্ধ পরিবর্তিত হয়। আমের পরিচিত প্রজাতির মধ্যে খিরসা, ফজলি, ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম রুপালি, মল্লিকা, সুবর্ণরেখা, গোপালভোগ, মিসরিদানা, নীলাম্বরী, গোপাল ভোগ, কেন্ট, কালীভোগ, কাচামিঠা, আলফোনসো, বারোমাসি, সূর্যপুরী, পাহুতান ইত্যাদি। বিশ্বে এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৩৫টি জাতের আম রয়েছে।
আমের পুষ্টিগুন
আম একটি পুষ্টিকর ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে। আমে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি৬। এছাড়াও অ্যামিনো অ্যাসিড, পটাসিয়াম এবং তামা রয়েছে। আমে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, লুসিয়ান জিলাইক অ্যাসিড, আলফা ক্যারোটিন, পলিফেনলস কোয়ার্চেন কর্পূর, ক্যাফেইক অ্যাসিড ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (USDA) অনুসারে, এক কাপ (155 গ্রাম) কাটা আমে থাকে
- এনার্জি - ৯৯ কিলোক্যালরি
- প্রোটিন - ১.৩৫ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট - ২৪.৭ গ্রাম
- চর্বি - ০.৬২৭ গ্রাম
- চিনি - ২২.৫ গ্রাম
- ভিটামিন সি - ৬০.১ এমসিজি
- ডায়েটারি ফাইবার - ২.৬৪ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম - ১.২ মিলিগ্রাম
- আয়রন - ০.২৬৪ মিগ্রা
- সোডিয়াম - ১.৬৫ মিলিগ্রাম
- পটাসিয়াম - ২৭৭ মিলিগ্রাম
- ফোলেট - ৭১ এমসিজি
আম খাওয়ার উপকারিতা
হৃদরোগ দূরে রাখে
বর্তমানে নারী পুরুষ সকলেরই ভয়ের অন্যতম কারণ হৃদরোগ। এই রোগ থেকে বাঁচতে বেশি করে আম খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। এটি ভিটামিন এ-এর উৎস। আম খেলে হৃদরোগ, ভুলে যাওয়ার সমস্যা, বাতের মতো রোগ দূরে থাকে।
খনিজ ঘাটতি দূর করে
শরীরে মিনারেলের ঘাটতি হলে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে। আম খেলে এই ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ হয়। কারণ আমে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। যেকোনো পরিশ্রমের পর আম খেলে পটাশিয়ামের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়। আম শরীর থেকে নির্গত প্রয়োজনীয় লবণের ঘাটতিও পূরণ করে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
শিশুকে আম খেতে দেওয়া উচিত কারণ এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আমে গ্লুটামিক অ্যাসিড রয়েছে যা মস্তিষ্কের কোষগুলিকে উদ্দীপিত করে। ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। তাই মস্তিষ্কের চাপ কমাতে আম খাওয়া যেতে পারে।
ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর করে
আম ঠান্ডার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আম ভিটামিন এ এবং ডি সমৃদ্ধ। এই দুটি ভিটামিন দ্রুত সর্দি নিরাময় করে। তাই সর্দি বা ফ্লু হলে আম খেতে পারেন। এটি আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
হজমে সাহায্য করে
অনেকেই হজমের নানা সমস্যায় ভোগেন। সেই সমস্যাগুলো থেকেও মুক্তি পেতে পারে আম। এর ফলে প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায়। তাই আম খেলে হজমশক্তির উন্নতি ঘটে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে আম সমান উপকারী।
আম খাওয়ার অপকারিতা বা আম খাওয়ার কিছু সাবধানতা
আম একটি উপকারী ফল হলেও একবারে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়। কারণ পাকা আমে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এই ফল খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত আম খাওয়া ক্ষতিকর। ডায়াবেটিস রোগীদের আম খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একটি মাঝারি আমে তিন গ্রাম ফাইবার থাকে। তাই একই সঙ্গে বেশি আম খেলে বদহজম বা ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।