জীবন বদলে দেয়া বানী - Motivational Story
একদিন মোগল সম্রাট আকবর তার খাপ খোলা তলোয়ারটি পরিষ্কার করছিলেন। তলোয়ার টি পরিষ্কার করতে গিয়ে হঠাৎ ধারালো তলোয়ারের সাথে লেগে তার হাতের একটা আঙ্গুলের বেশ খানিকটা অংশ কেটে গেল। আর সেই কাটা আঙ্গুল দিয়ে তখন ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। সেই এই সময় সেখানে বাদশা আকবরের অন্যতম সভাসদ বীরবল উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বাদশা আকবরকে বললেন মহারাজ মন খারাপ কইরেন না। যা হয় তা আসলে আমাদের ভালোর জন্যেই হয়। এই কথা শুনে বাদশা আকবর তো মনে মনে প্রচন্ড পরিমাণে রেগে গেলেন। তিনি বীরবল কে বললেন বীরবল তোমার মাথায় কি কিছু নেই এদিকে আমার আঙ্গুল কেটে গেছে। আমি যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছি আর তুমি বলছ যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
এই ঘটনার কিছুদিন পর বাদশাহ আকবর কিছু সৈন্যদের নিয়ে জঙ্গলে শিকারে বের হলেন। এক সময় জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে তিনি সবার থেকে আলাদা হয়ে গেলেন। অনেক খোজা খুজি করার পরেও তার সাথে থাকা সৈন্যদের দেখা পেলেন না। এরপর তিনি জঙ্গলের ভিতর থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুজতে লাগলেন। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে এক দময় জঙ্গলের আদিবাসীদের মুখোমুখি হলেন।
জঙ্গলের আদিবাসীরা তখন বাদশাহকে বন্দী করে একটি মন্দিরের সামনে নিয়ে গেলেন। তারা বাদশা কে বলি দিবে বলে মনস্থির করল। তারা পূজা অর্চনা আরম্ভ করলো এবং বলির সমস্ত আয়োজন করতে লাগলো। হঠাৎ আদিবাসীদের মধ্যে একজন দেখতে পেল যে রাজার একটা আঙ্গুল কাটা আর তাদের নিয়ম অনুযায়ী কোন অসম্পূর্ণ বা খুত আছে এমন মানুষকে বলি দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই তারা এক প্রকার বাধ্য হয়েই বাদশাকে ছেড়ে দিলেন।
বাদশা আকবর তখন নিজের রাজ্যে ফিরে এসে বীরবলের কাছে গেলেন এবং বীরবল কে তার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বললেন। সবকিছু শোনার পর বীরবল বললেন মহারাজ আমিতো আগেই বলেছিলাম।যা হয় ভালোর জন্যই হয়। এবার বুঝলেন তো। সেদিন যদি তলোয়ারে আপনার হাতের আঙ্গুল না কাটত তাহলে আজকে আপনার কি অবস্থা হত।
বীরবলের এই কথা শুনে এবার বাদশা কিছুখন মাথা চুলকালেন আর কি যেন মনে মনে ভাবলেন। কিছুক্ষন পর আবার বাদশা বললেন। আচ্ছা সে না হয় বুঝলাম আমার সঙ্গে ভালো হয়েছে। কিন্তু তুমিতো বন্দী হয়ে সাজা ভোগ করলে। তাহলে তোমার সাথে কি ভালো হয়েছে শুনি। তখন বীরবল একটু হেসে বললেন। মহারাজ আমার সঙ্গে তো আরো বেশি ভালো হয়েছে।
বাদশা এবার একটু অবাক হয়ে বললেন কিভাবে তোমার সঙ্গে ভালো হলো বুঝলাম নাতো। বীরবল বলেলন দেখুন মহারাজ আপনি যদি আমাকে বন্দী না করে রাখতেন তাহলে আমি নিশ্চয়ই আপনার সঙ্গে শিকারে যেতাম। আর আপনার আঙ্গুল তো কাটা আছে বলে তারা আপনাকে ছেড়ে দিল কিন্তু আমার তো সব কিছুই ভাল ছিল আমাকে তো ওরা ঠিকই বলি দিয়ে দিতো। সুতরাং যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
আমাদের জীবনেও মাঝেমধ্যে এমন খারাপ কিছু হয়ে থাকে। আর তখন আমাদেরও মনে হয় আমার সঙ্গে এত খারাপ কি করে হতে পারে। দুনিয়ার সবথেকে দুর্ভাগ্যবান মানুষ হয়তো আমিই। কিন্তু বাস্তবে এই খারাপের আড়ালেই আমাদের সাথে ভাল কিছু হয়ে যায় যা আমরা হয়ত অনেক পরে অনুধাবন করতে পারি।
তাই খারাপ সময় গুলোতে আমাদের হতাশ না হয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। নিশ্চয়ই তার ফয়সালা আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে ইনশাল্লাহ।
তোমার রাগকে দমিয়ে রাখার অভ্যাস কর তা না হলে এই রাগই একদিন তোমাকে নিঃস্ব করে দেবে।
তুমি কতটা চেষ্টা করে যাচ্ছো তা কেউ দেখতে আসাওবে না। যতক্ষণ না তুমি সফল হতে পারছো। এই সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত চেষ্টা করা বন্ধ করো না।
যদি তুমি খারাপ পরিস্থিতিতেও হাসতে পারো তবে তুমি জিতে গেছো। যন্ত্রণা দেখে পালিয়ে যেও না একদিন যন্ত্রণাই তোমার জীবনের বড় দৃষ্টান্ত হবে।
বইয়ের পাতা মানুষকে যা শিক্ষা দেয় জীবনের পথে তার থেকে অনেক বেশি কিছু আমাদের শিখিয়ে দেয়।
তুমি যদি কাউকে খুব বেশি গুরুত্ব দাও দেখবে সে তোমাকে তত বেশি সস্তা ভাববে।
কাছের বন্ধু তো একমাত্র তারাই হয় যারা আসলে হাসির পিছনে লুকিয়ে থাকা সমস্ত কষ্ট গুলো বুঝতে পার।
জীবনে ভালো কিছু পেতে হলে মানুষের থেকে পাওয়া সমস্ত অপমান গুলো কে মনের মধ্যে গেঁথে এবং সমস্ত জমে থাকা অভিমান গুলোকে পায়েল চাপা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
জীবনে তুমি জয়ের হাসিটা হাসতে পারবে সেদিন। যেদিন তুমি তাদের সামনে কিছু একটা করে দেখাতে পারবে যারা একদিন বলেছিল তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না।
বৃষ্টি ছাড়া যেমন রংধনুর দেখা পাওয়া যায় না তেমনি ব্যর্থ না হয়ে সফল হওয়া যায় না।
যদি কখনো তোমাকে কেউ ছোট করতে চায় তাহলে বুঝে নিও তুমি তাদের থেকে উপরে আছো তাই তারা তোমাকে নিচে নামাতে চায়।
নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তোল যাতে তোমাকে একদিন যারা একা করে চলে গেছে তারা যেন তোমার বর্তমান অবস্থা দেখে তোমার বর্তমান অবস্থা দেখে।
বিশ্বাস খুব ছোট একটা শব্দ। যা পড়তে এক সেকেন্ড সময় লাগে।ভাবতে কয়েক মিনিট সময় লাগে বুঝতে কয়েকদিন সময় লাগে আর প্রমাণ করতে সারাটা জীবন লাগে।
যারা অল্পতেই কেঁদে ফেলেন তারা কেমন মানুষ হয় জানেন তাদের দুঃখ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়না। তাদেরকে হয়ত অনেকেই ভীতু হবেন। বাস্তবে কিন্তু তারা খুবই সাহসী হয়ে থাকেন। তারা সকল প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে খুব সহজেই সামনে এগিয়ে যেতে পারেন।