মন থেকে যৌন উত্তেজনা দূর করার উপায় । আম্রপালি - Amrapali - Gotam Buddha
গৌতম বুদ্ধের সময়কালে আম্রপালি নামে একজন সুন্দরী মহিলা ছিলেন। তিনি যেমনি রুপবতী ছিলেন তেমনি তার ধন সম্পদও ছিল প্রচুর। তিনি এওটাই আবেদনময়ী ছিলেন যে আম্রপালির সাথে একটা রাত কাটানোর জন্য শহরের সমস্ত ধনী ব্যক্তিরা এমন কি বড় বড় অনেক রাজারাও তার বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতেন। আসল কথা হচ্ছে তিনি একজন পতিতা নারী ছিলেন। আর এত ধন সম্পত্তি তিনি তার শরীরের বিনিমযয়েই কামিয়েন।
তিনি এত ধন-সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন যে, তিনি চাইলে গোটা একটা রাজ্য কিনে নিতে পারতেন। লোকজন তাকে নগরবধূ বলে ডাকত । যার মানে হল সারা নগরের বধু । সেই সময় প্রতিটা পতিতা নারীদের নগরবধূ বলা হত। কিন্তু এত কিছু থাকার পরেও আম্রপালির মনে শ্বস্তি ছিল না। প্রকৃত ভালোবাসা পাওয়ার তার মনটা সব সময় উদাসীন হয়ে থাকতো।
একদিন আম্রপালি তার ঘরের জানলা ধরে উদাস মনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন তিনি তার বাড়ির সামনে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুক কে দেখতে পান। সেই যুবক ভিক্ষুকের পরনে গেরুয়া কাপড় আর হাতে একটা মাটির পাত্র ছাড়া আর কিছুই ছিল না। তবে তার চরিত্রে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস এবং আলাদা এক জ্যোতি ছিল। আম্রপালি ঐ ভিক্ষুকের চরিত্রের তেজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান এবং মনে মনে তার প্রতি কিছুটা আসক্ত হয়ে পড়েন।
আম্রপালি তখন সেই ভিক্ষুকের কাছে গিয়ে তাকে তার বাড়িতে এক বেলা খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। সেই ভিক্ষুকও অল্পতেই আম্রপালির আমন্ত্রণ গ্রহন করে তার বাড়িতে আসতে রাজী হলেন। এরপর ভিক্ষুক তার বাড়িতে আসলে আম্রপালি তাকে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ালেন। খাওয়া শেষে আম্রপালি তাকে বললেন আর তিন দিন বাদেই তো বর্ষাকাল শুরু হবে। তাই আগামী চার মাস আপনি আমার বাড়িতেই থাকবেন। এখানে বলে রাখি বৌদ্ধ ভিক্ষুকরা বর্ষাকালে চার মাস কোথাও যান না। আর এই চার মাস তারা এক জায়গায় থাকেন। কিন্তু বাকি 8 মাস তারা ক্রমাগত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যান। আর তারা সাধারণত তিন দিনের বেশি কোন এক জায়গায় থাকেন না।
আম্রপালি তখন সেই ভিক্ষুকের কাছে গিয়ে তাকে তার বাড়িতে এক বেলা খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। সেই ভিক্ষুকও অল্পতেই আম্রপালির আমন্ত্রণ গ্রহন করে তার বাড়িতে আসতে রাজী হলেন। এরপর ভিক্ষুক তার বাড়িতে আসলে আম্রপালি তাকে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ালেন। খাওয়া শেষে আম্রপালি তাকে বললেন আর তিন দিন বাদেই তো বর্ষাকাল শুরু হবে। তাই আগামী চার মাস আপনি আমার বাড়িতেই থাকবেন। এখানে বলে রাখি বৌদ্ধ ভিক্ষুকরা বর্ষাকালে চার মাস কোথাও যান না। আর এই চার মাস তারা এক জায়গায় থাকেন। কিন্তু বাকি 8 মাস তারা ক্রমাগত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যান। আর তারা সাধারণত তিন দিনের বেশি কোন এক জায়গায় থাকেন না।
আম্রপালি কথা শুনে ভিক্ষুক বললেন আমি এই বিষয়ে আমার গুরু গৌতমবুদ্ধকে বলব। তিনি যদি আমাকে আপনার বাড়িতে থাকার অনুমতি দেন তাহলে আমি আপনার বাড়িতে থাকতে পারব। আর তিনি অনুমতি না দিলে আমি আপনার বাড়িতে থাকতে পারবো না। এই কথা বলে সেই ভিক্ষুক সেখান থেকে গৌতম বুদ্ধের আস্রমে চলে গেলেন।
তবে সেই ভিক্ষুক গৌতম বুদ্ধের আশ্রমে পৌঁছানোর আগেই কিছু ভিক্ষুক গৌতম বুদ্ধকে বললেন প্রভু, আপনি ঐ ভিক্ষুককে আটকান কারণ ওকে আম্রপালি তার নিজের বাড়িতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আর একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুক কোন পতিতার বাড়িতে থাকবে এটা মোটেই কোনো ভালো কাজ নয়। গৌতম বুদ্ধ তাদেরকে বললেন, তোমরা শান্ত হও আগে ও আসুক।তাররপর ওর মুখ থেকে আগে পুরো ঘটনাটা শুনি। কিছু সময় পরে সেই যুবক ভিক্ষুক গৌতম বুদ্ধের কাছে এসে পুরো ঘটনাটি খুলে বললেন। তিনি বললেন এক নারী আমাকে তার বাড়িতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
আগামী বর্ষাকালের চার মাস তো প্রত্যেক ভিক্ষুককেই কারো না কারো বাড়িতে থাকতে হবে। আর এই চার মাস আমাকেও কারো বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে। আপনি অনুমতি দিলে আমি ওই নারীর বাড়িতে থাকতে চাই। গৌতম বুদ্ধ তখন সেই যুবক ভিক্ষুককে ঐ নারীর বাড়িতে থাকার জন্য অনুমতি দিলেন। এই ঘটনা দেখে সেখানে থাকা অন্যন্য ভিক্ষুকরা অবাক হয়ে গেলেন। তারা একে অন্যের সাথে বলাবলি করছিল প্রভু এটা কি করলেন। তিনি জেনে শুনে ওকে একজন পতিতার বাড়িতে থাকার অনুমতি দিলেন।
এরপর তদের মধ্য থেকে একজন ভিক্ষুক গৌতম বুদ্ধকে বলে উঠলেন প্রভু এই যুবক আপনার থেকে সত্য কথা লুকিয়েছে। সে বলেছে একজন নারী তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু সেতো কোন সাধারণ নারী নয়। সে একজন নগর বধু সে একজন পতিতা নারী। এই কথার উত্তরে গৌতম বুদ্ধ বললেন আমি জানি। কিন্তু সে ঐ নারীর বিষয়ে বলার সময় পতিতা বা নগর বধূ শব্দের উচ্চারণ করেন নি। কারণ তার মনে ওই নারীর প্রতি সম্মান আছে। এই কারণে আমি তাকে ওই নারীর বাড়িতে থাকার অনুমতি দিয়েছি।
এই ঘটনার তিন দিন পর সেই যুবক ভিক্ষুক আম্রপালির বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। যেখানে সে আগামী চার মাস থাকবেন। তবে এই ঘটনা নিয়ে আশ্রমে নানা রকমের কানাঘুষা চলতেই থাকে। আর গৌতুম বুদ্ধ তা জানতে পেরে সবাইকে বললেন তোমরা এই বিষয়ে নিয়ে আলোচনা বন্ধ করো। আগামী ৪ মাস তো দেখতে দেখতেই কেটে যাবে।
আমার শীষ্যের প্রতি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে। যদি সে নিজেকে সংযত করতে পারে এবং একাগ্র মনে ধ্যান করতে পারে তাহলে সে ঐ পতিতা নারীর জীবন বদলে দেবে। আর যদি ঐ পতিতা নারী তার রূপের জালে তার ধ্যান ভঙ্গ করতে পারে তাহলে ঐ ভিক্ষুকের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। এটা এখন ধ্যান এবং শারীরিক চাহিদার মধ্যে একটি দ্বন্দ। আর এর উত্তর তোমারা চার মাস পরই পেয়ে যাবে।
তবে এরপরেও অন্যন্য ভিক্ষুকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে। একজন বলে ওই ভিক্ষুকের বয়স কম আর আম্রপালি অনেক সুন্দরী সে নিজেকে কিভাবে আটকাবে। গৌতম বুদ্ধ তার উপরে ভরসা করে ভুলই করলেন।
এরপর টানা চার মাস কেটে গেল। চার মাস পর সেই ভিক্ষুক গৌতম বুদ্ধের আশ্রমে ফিরে এলেন। সাথে সেই পতিতা নারী আম্রপালিকেও নিয়ে এসেছে। তখন ভিক্ষুক ও আম্রপালি দুজনেই গৌতম বুদ্ধের পা ছুয়ে প্রনাম করলেন। এরপর আম্রপালি বললেন প্রভু, আমি চার মাস ধরে এই সন্নাসীকে নানা ভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছি। তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়েছি আমার রুপের জালে আটকাতে চেয়েছি। কিন্তু আমি বারবার ব্যর্থ হয়েছি। উল্টো এই সন্ন্যাসী আমার হৃদয় পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি এই পৃথিবীতে রুপ যৌবন ধনসম্পত্তি ঐশ্বর্য দব কিছুই হল মিথ্যে। নিজেকে জানাই হলো জীবনের আসল উদ্দেশ্য। দয়া করে আপনি আমাকে এইসব মায়া ত্যাগ করার কৌশল শেখান।
এরপর বহু বছর কেটে গেল। আম্রপালি, যে কিনা এক সময় নগরবধূ ছিল। যার রূপে রাজা মহারাজা মোহিত হয়ে যেত। সে এরপর থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুকের জীবন বেছে নিয়েছিল।
যদি আমরা আমাদের মন ভিতর থেকে কাম বাসনা বা যৌনতাপূর্ন চিন্তাভাবনাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই। তাহলে সবার প্রথমে আমাদের যৌনতার ইচ্ছা কে ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু তা না করে আমরা যৌনতার ইচ্ছাকে আরো বেশি করে পুশে রাখি। এরপর আমরা অবৈধ সম্পর্ক কিংবা হস্তমৈথুনে আসক্ত হয়ে পড়ি। আমরা ভুলেই যাই যে তা আমাদের শরীরের জন্য কতটা খারাপ। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকে এগুলো মহাপাপ।
আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মহামানব এসেছেন তারা কখনোই এমন বাজে অভ্যাসে জড়িয়্র পরেন নি। তাই জীবনে সফল হতে হলে আমদের এই বদ-অভ্যাস ত্যাগ করতেই হবে। মনের মধ্যে যেন যৌনতাপূর্ণ চিন্তাভাবনার না আসে সে জন্য একাগ্রচিত্তে ধ্যান করতে হবে এবং ক্রিয়েটিভ কোনো কাজে নেই নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে হবে।
একটাবার ভেবে দেখেন, সেই বৌদ্ধ ভিক্ষুক যে কিনা সুন্দরী যুবতী আম্রপালির ঘরে টানা চার মাস ছিল। সে প্রতিনিয়ত আম্রপালির উত্তেজনা দেখেছিলেন। তবে তিনি ধ্যানের মাধ্যমে নিজের মনকে শান্ত রেখেছিলেন। তিনি কখনও একবারের জন্যও আম্রপালি কে ছুয়েও দেখেননি। কারণ তিনি এই বিষয়ে কখনো ভাবেনই নি। তিনি সব সময় ভালো কিছু ভেবেছেন। আর নিজের মনের উপরে, নিজের চিন্তাভাবনার উপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলেন। তাই যখনই আপনার মনে কোন খারাপ চিন্তা আসলে চেষ্টা করবেন সাথে সাথে সেই চিন্তাকে মন থেকে সরিয়ে দিতে।